গোসলের বর্ণনা
গোসল আরবী শব্দ। এর অর্থ ধৌত করা। এ হিসেবে কোন অঙ্গ বা সম্পূর্ণ অঙ্গটি ধোয়া বা সম্পূর্ণ শরীরটি ধোয়া ঐ একই কথা। সব ধরনটিকেই গোসল বলা হয়। কিন্তু প্রচলিত ভাষায় আমরা যাকে গোসল বলি তা হলো, দৈনন্দিন গোসল ফরয হওয়ার জন্য হোক কিংবা ময়লা পরিষ্কার করার উদ্দেশ্যেই হোক সম্পূর্ণ শরীর ধৌত করার নামই গোসল।
ফরয গোসল
মূলতঃ চারটি কারণে গোসল ফরয হয়ে থাকে-
১। জাগ্রত অবস্থায় হোক কিংবা নিদ্রিত অবস্থায় হোক, নারী অথবা পুরুষ যার হোক না কেন, আকস্মিক উত্তেজনার কারণে কিংবা বিপুল আসক্তি হেতু স্ববেগে বীর্যপাত হলে গোসল ফরয হয়।
২। স্বামী-স্ত্রী সহবাসকালে পুরুষের লিঙ্গের অগ্রভাগের মসৃন গোশত পিণ্ড যাকে 'হাশফা' বলে তা স্ত্রীলিঙ্গের ভিতর প্রবেশ করা মাত্রই স্বামী-স্ত্রী উভয়ের শরীর নাপাক হয়ে যায়, তখন গোসল করা ফরয।
৩। নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয়ে কাপড়, বিছানার চাদর বা শরীরে বীর্য দেখা গেলেও গোসল ফরয হয়ে থাকে। এটা স্বপ্নদোষ অথবা অন্য কোন কারণ ছাড়াও হতে পারে।
৪। মহিলাদের হায়েয অথবা নিফাসের রক্ত বন্ধ হওয়ার পর গোসল করে পাক-পবিত্র হওয়া ফরয, এ গোসলও ফরয গোসলের অন্তভুক্ত।
ওয়াজিব গোসল
সাধারণতঃ ওয়াজিব গোসল দু'প্ৰকার। মাত্র দুটো কারণেই গোসল ওয়াজিব হয়ে থাকে-
১। মৃত লোকদের গোসল দেয়া জীবিত লোকদের উপর ওয়াজিব।
২। কোন কাফির নাপাক হালতে মুসলমান হলে মুসলমান হওয়ার পূর্বে তার গোসল করা ওয়াজিব। ভুলবশতঃ গোসল না করে থাকলে পরে গোসল করবে, মূলতঃ প্রথমে গোসল করা ওয়াজিব ছিল।
সুন্নত গোসল
প্রকৃতপক্ষে চারটি কারণে গোসল করা সুন্নত। যেমন-
১। জুমআর নামাযের পূর্বে, যে গোসল দ্বারা জুমআর নামায আদায় করা হয়।
২। দু’ঈদের দিনে।
৩। যেদিন হাজীগণ হজ্জকার্য সমাপ্ত করে বা আরাফার দিনে।
৪। হজ্জ করবে এ নিয়তে ইহরাম বাঁধবার সময় গোসল করার সুন্নত।
মুস্তাহাব গোসল
তিনটি বিশেষ কারণে গোসল করা মুস্তাহাব হয়। যেমন-
১। কাফির ব্যক্তির শরীর পাক থাকা অবস্থায় গোসল করা।
২। নাবালেগ যখনই বালেগ হয়েছে, তা অনুমান করতে পারলে, তখন সাথে সাথে গোসল করা।
৩। শবে বরাত ও শবে কদর ইত্যাদি নফল ইবাদাত করার পূর্বে গোসল করা মুস্তাহাব।